ঢাকা, ২২ নভেম্বর শুক্রবার, ২০২৪ || ৮ অগ্রাহায়ণ ১৪৩১
good-food
৯৩৫

৭ বছরে কুলকিনারা হলো না সাগর-রুনি হত্যা তদন্তের  

লাইফ টিভি 24

প্রকাশিত: ১২:২৯ ১১ ফেব্রুয়ারি ২০১৯  

৭ বছরে বের হলো না সাংবাদিক দম্পতি সাগর সরওয়ার ও মেহেরুন রুনি হত্যাকাণ্ডের রহস্য। পুলিশ ও র‌্যাবের ৬ জন কর্মকর্তার হাত ঘুরলেও শেষ হলো না তদন্ত। তদন্ত প্রতিবেদন জমার জন্য এ পর্যন্ত আদালত থেকে ৬৩ বার সময় নিয়েছেন তদন্ত কর্মকর্তারা।

 

তদন্ত শেষে কবে নাগাদ অভিযোগপত্র দেয়া যাবে, সে বিষয়েও সুর্নিদিষ্ট করে কিছু বলতে পারছেন না বর্তমান তদন্ত কর্মকর্তা র‌্যাবের এএসপি মো. শহিদার রহমান।

 

তদন্তের প্রয়োজনে যে সব পরীক্ষা করা হয়েছে, তার সবগুলোর প্রতিবেদন পাওয়ার কথা জানালেও এতে কী মিলেছে, সে বিষয়ে কিছু বলতে চাইছেন না তিনি।

 

চাঞ্চল্যকর এই মামলায় যে ৮ জনকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছিল, তার মধ্যে দুজন জামিনে বেরিয়ে গেছেন বলে জানিয়েছেন তদন্ত কর্মকর্তা।

 

২০১২ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি রাতে রাজধানীর পশ্চিম রাজাবাজারের ভাড়া বাসায় খুন হন মাছরাঙা টেলিভিশনের বার্তা সম্পাদক সাগর সরওয়ার এবং এটিএন বাংলার জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক মেহেরুন রুনি। দুজনকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করা হয়। ওই রাতে তারা ছাড়া ঘরে ছিল তাদের একমাত্র শিশুসন্তান মেঘ।

 

হত্যাকাণ্ডের পর রুনির ভাই মো. নওশের আলম রোমানের করা মামলাটি প্রথমে তদন্ত করেন শেরেবাংলা নগর থানার এসআই জহুরুল ইসলাম। তার কাছ থেকে তদন্তের দায়িত্ব গিয়েছিল ডিবির পরিদর্শক রবিউল আলমের কাছে।

 

৬২ দিন পর ডিবি আদালতের কাছে ব্যর্থতা স্বীকার করলে ২০১২ সালের এপ্রিলে তদন্তের দায়িত্বে আসে র‌্যাব।

এরপর র‌্যাবের কয়েকজন কর্মকর্তার হাত ঘুরে তদন্তভার আসে এএসপি শহিদারের কাছে।

 

তদন্তের অগ্রগতি বিষয়ে কর্মকর্তা বলেন, ময়নাতদন্ত, ডিএনএ পরীক্ষাসহ তদন্তের প্রয়োজনে যে সব পরীক্ষা করা হয়েছিল, সবগুলোর ফলাফল তারা পেয়েছেন। বিদেশে করা পরীক্ষার ফলাফলও এসেছে।

 

অভিযোগপত্র বিষয়ে তিনি বলেন, এটি চলমান প্রক্রিয়া। চার্জশিট দেয়ার ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট করে দিনক্ষণ দেয়ার সুযোগ নেই। সময় হলে চার্জশিট দেয়া হবে।

 

আদালতের নিয়মে আগামী ১৭ ফেব্রুয়ারি মামলার তদন্ত প্রতিবেদন জমার দিন রয়েছে। তবে এই পর্যন্ত আদালত থেকে ৬৩ বার সময় নিয়েছেন তদন্ত কর্মকর্তারা। সময়ে সময়ে তারা দিয়ে যাচ্ছেন তদন্তের অগ্রগতির প্রতিবেদন।

 

২০১৭ সালের ২১ মার্চ তৎকালীন তদন্ত কর্মকর্তা র‌্যাবের ইনভেস্টিগেশন অ্যান্ড ফরেনসিক উইংয়ের সহকারি পুলিশ সুপার মহিউদ্দিন আহমেদ একটি প্রতিবেদন দিয়েছিলেন আদালতে।

 

তিনি বলেন, গতানুগতিক তদন্তের বাইরে গিয়ে অত্যাধুনিক তদন্ত পদ্ধতি ও বৈজ্ঞানিক তথ্য-প্রমাণ প্রাপ্তির লক্ষ্যে যুক্তরাষ্ট্রের দুটি অত্যাধুনিক ল্যাবকে এ তদন্তের সঙ্গে সম্পৃক্ত করা হয়েছে। ল্যাব থেকে পাওয়া ডিএনএ পরীক্ষার প্রতিবেদন বিস্তারিত পর্যালোচনা করে দেখা হচ্ছে।

 

বিদেশে পাঠানো আলামতের ডিএনএ পরীক্ষার ফলাফলের সঙ্গে দেশে চালানো বিভিন্ন পরীক্ষার ফলাফল মিলিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন তদন্ত সংশ্লিষ্টরা।

 

মামলাটিতে গ্রেপ্তার হয়ে এখন কারাগারে রয়েছেন ওই বাড়ির নিরাপত্তা রক্ষী এনাম আহমেদ ওরফে হুমায়ুন কবির, রফিকুল ইসলাম, বকুল মিয়া, মিন্টু ওরফে বারগিরা মিন্টু ওরফে মাসুম মিন্টু, কামরুল হাসান অরুণ ও আবু সাঈদ।

 

রুনির কথিত বন্ধু তানভীর রহমান ও বাড়ির দারোয়ান পলাশ রুদ্র পাল জামিনে বাইরে রয়েছেন।

 

সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ডের দিনটিতে নানা প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করছে সাংবাদিকদের বিভিন্ন সংগঠন। এসব কর্মসূচিতে বিচার শুরু না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন পরিবার সদস্য ও সহকর্মীরা।

মিডিয়া বিভাগের পাঠকপ্রিয় খবর